বর্তমানে আমাদের হাঙ্গেরীর স্টুডেন্ট প্যাকেজ মাত্র আট লক্ষ টাকা
|
দানিয়ুবের নাম জানেন না? কৃষ্ণসাগরের ঘন নীল জলের সাথে মিশে গেছে ভুবন বিখ্যাত এ নদী। দানিয়ুবের জল গড়িয়ে গেছে ইউরোপের বিভিন্ন দেশেই। তার একটি অন্যতম দেশ হাঙ্গেরি। হাঙ্গেরি ইতিহাসের অন্যতম সম্পদশালী দেশ যার গুরুত্ব ক্রমশই বেড়ে চলছে।উচ্চ শিক্ষা বা ভ্রমনের উদ্দেশে ইউরোপ প্রায় বেশিরভাগ মানুষের প্রথম পছন্দ। ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশে স্টুডেন্টদের জন্য ইউরোপের প্রায় সব দেশের ভিসা কড়াকড়ি করে দিয়েছে । বর্তমানে ইউরোপের গরীব দেশগুলোতেও বাঙালীদের ভিসা দিচ্ছে না । দূতাবাস থেকে শতকরা ৯৯% ভিসা রিজেক্ট করে দিচ্ছে। ফলে বাংলাদেশে স্টুডেন্টরা উচ্চশিক্ষার ব্যাপারে পিছিয়ে যাচ্ছে। ইউরোপের সেনজেনভুক্ত সব দেশ যেখানে ভিসা কড়াকড়ি করছে সেখানে হাঙ্গেরি ভিসার ব্যাপারে একদম শিথিলতা বজায় রাখছে। দেশটির সাথে বাংলাদেশের সম্পর্কও বেশ ভালো।
গত দুদশকে উচ্চ শিক্ষার সম্প্রসারণের কারণে, শিক্ষার্থী এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বেড়েই চলছে যা চোখে লাগার মতো । ১৯৯০ সাল থেকে ২০১০ সালের মধ্যে উচ্চশিক্ষায় ছাত্রছাত্রী বেড়েছে চারগুন, ৯০০০০ হাজার থেকে বেড়ে হয়েছে ৪০০০০০ (৪লক্ষ)।
হাঙ্গেরিতে বর্তমানে ৬৬টি স্বীকৃত ও গৃহীত উচ্চ শিক্ষার প্রতিষ্ঠান রয়েছে – চার্চ, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ সহ এই ৬৬টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে ১৯টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, ৯ টি সরকারি কলেজ, ৭ টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং ৩১ টি বেসরকারি কলেজ। উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকাটি অন্তর্ভুক্ত হয় হাঙ্গেরিয়ান এক্রেডিটেশন কমিটি (Hungarian Accreditation Committee)দ্বারা। সবকটা হাঙ্গেরিয়ান বিশ্ববিদ্যালয় রাজধানী অথবা ঐতিহ্যবাহী শহরে অবস্থিত, প্রত্যেকটা বিশ্ববিদ্যালয়ই প্রাণবন্ত, আন্তর্জাতিক এবং বহুসংস্কৃতিময় পরিবেশ উপস্থাপন করে। যেকারণেই হাঙ্গেরি হয়ে উঠেছে উচ্চশিক্ষার জন্যে আকর্ষণীয় গন্তব্য।
দেশটির মাথাপিছু জিডিপি হচ্ছে প্রায় ১৪,২২৪ ইউ এস ডলার এবং দেশটিতে বেকারত্বে হার কেবলমাত্র ৩.৭%।
দেশটি সম্পর্কে আরও কিছু জানার দরকার রয়েছে আপনাদের।
ভৈাগলিক সীমারেখা
হাঙ্গেরি মধ্য ইউরোপে অবস্থিত একটি স্থলবেষ্টিত প্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্র। এ দেশের সিংহভাগ অঞ্চল দানিউব উপত্যকা তথা হাঙ্গেরীয় সমভূমিতে অবস্থিত। এই সমতলভূমির ভেতর দিয়েই মূলত দানিউব নদী প্রবাহিত হয়েছে। দেশটির মোট আয়তন ৯৩,০৩০ বর্গ কিলোমিটার এবং জনসংখ্যা প্রায় ১০,০৬,৪০০ জন। হাঙ্গেরির রাজধানী ও বৃহত্তম শহর বুদাপেস্ট। শহরটি দানিউব নদীর উভয় তীরে অবস্থিত। পূর্ব মধ্য ইউরোপের সাংস্কৃতিক ও বাণিজ্যিক কেন্দ্র এ শহরটি। হাঙ্গেরির উত্তর দিকে স্লোভাকিয়া, উত্তর-পশ্চিমে ইউক্রেন, পূর্ব-পশ্চিমে অস্ট্রিয়া, দক্ষিণে সার্বিয়া, দক্ষিণ-পশ্চিমে ক্রোয়েশিয়া এবং সর্বশেষ দক্ষিণে রয়েছে স্লোভেনিয়া। হাঙ্গেরীর জাতীয় ভাষা “হাঙ্গেরীয়ান” ও “ রোমানী”।
ভাষা
ভাষা
হাঙ্গেরির সরকারি ভাষা হাঙ্গেরীয়। হাঙ্গেরির জনগণ নিজেদেরকে “মজর” নামে ডাকে। মজরেরা ছিল এশিয়া থেকে আগত যাযাবর গোষ্ঠী। ৯ম শতাব্দীর শেষভাগে আরপাদের নেতৃত্বে মজরেরা দানিউব ও তিসজা নদীর মধ্যবর্তী সমভূমি জয় করে, যা বর্তমান হাঙ্গেরীয় সমভূমির মধ্যভাগ। ১১শ শতকের শুরুর দিকেই মজরেরা রাজনৈতিকভাবে সংঘবদ্ধ হয় এবং খ্রিস্টধর্মে ধর্মান্তরিত হয়। হাঙ্গেরির প্রথম রাজা ছিলেন প্রথম স্টিফেন (১০০০ খ্রিস্টাব্দ)। ১০৮৩ সালে তাঁকে সাধু ঘোষণা করা হয়।
অর্থনীতি
দেশটিতে ৬৫ লাখ ১১ হাজার হেক্টর জমিতে চাষাবাদ করা হয়। কৃষিপণ্যের মধ্যে আছে – গম, রাই, বার্লি, ভুট্টা, আলু, সূর্যমুখি বীজ প্রভৃতি। দেশটির ১৬লাখ ৭০ হাজার হেক্টর এলাকা জুড়ে রয়েছে সবুজ বনভূমি। হাঙ্গেরি দেশটিকে সমৃদ্ধ দেশ বলা যায়। শিল্পসমূহের মধ্যে আছে লৌহ ও ইস্পাত শিল্প, সিমেন্ট কারখানা, সার কারখানা, চিনি শিল্প, রাসানিক শিল্প, চামড়া শিল্প প্রভৃতি। দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা বৈদেশিক বাণিজ্যের উপর নির্ভরশীল। হাঙ্গেরিতে তেল ও গ্যাস ছাড়া অন্যান্য খনিজ দব্যের মধ্য আছে কয়লা, লিগনাইট, বক্সাইট প্রভৃত।
পর্যটন
প্রতি বছর প্রচুর পর্যটক দেশটি ভ্রমণ করে। ২০১৭ সালে, দেশটি ২৬৩,৯৪০টি ভিসা অ্যাপ্লিকেশন গ্রহণ করে। পর্যটনের ক্ষেত্রে, হাঙ্গেরি ইউরোপের প্রধান চিকিৎসা পর্যটন কেন্দ্রগুলির মধ্যে একটি এবং অন্যতম। শুধুমাত্র দন্ত পর্যটন ক্ষেত্রে, এটি ইউরোপে ৪২% এবং বিশ্বব্যাপী ২১% ভাগ রয়েছে।এটি ১৬ শে এপ্রিল ২০০৩ এ শেনজেন চুক্তিতে স্বাক্ষরিত হয় এবং ২১ ডিসেম্বর ২০০৭ এ এটি বাস্তবায়ন শুরু করে।
0 Reviews:
Post a Comment