মালয়েশিয়া সরকারের সাথে বাংলাদেশ সরকারের জনশক্তি রপ্তানি বিষয়ে চুক্তি হয়েছে কিন্তু আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো লোক পাঠানো শুরু হয়নি। কবে হবে তা কেবল আল্লাহর ফেরেসতা আর যারা বাংলাদেশের সরকারের সাথে এই চুক্তি চুক্তি মজার খেলা খেলে থাকে তারাই বলতে পারবে। মনে রাখবেন মালয়শিয়ায় সরকারের পক্ষ থেকে প্রচুর পরিমান লোক পাঠানো কেবল একটা গুজব যাকে আমাদের ভাষায় বলা যেতে পারে ফকিরাপুলী গুজব। ত্রিশ হাজার টাকায় মালয়শিয়ায় সরকারের পক্ষ থেকে জব ভিসায় লোক পাঠানো দিনের পর দিন বাতাসে উড়ে বেড়ানো গুজব ছাড়া কিছুই নয়। মনে রাখবেন ত্রিশ হাজার কেন তিন লাখ টাকায়ও আপনি ঐ ভিসা পাবেননা। কারনটা বলে নেই, আমরা যারা জব ভিসা নিয়ে গবেষনা করি তারা জানি বিদেশে বেতন যদি ১০,০০০ হয়ে থাকে তবে সেই ভিসার দাম হবে ১০০০০০ (এক লাখ) টাকা। যদি বেতন ২০০০০ হয়ে থাকে তবে তার দাম হবে ২০০০০০ (দুই লাখ) টাকা। এভাবে বেতন প্রতি দশকে বাড়লে তার দাম শতকে বাড়ে। মালয়শিয়া সাধারনতঃ শ্রমিকদের ২৫০০০ থেকে ৩০০০০ টাকা বেতন দেবে। তাই তার দাম স্বাভাবিকভাবে হবে ৩০০০০০ (তিন লাখ) টাকা। দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা এই স্বাভাবিক প্রক্রিয়া কেন স্বাভাবিক নিয়মে পড়ে যাবে আর লস খাবে সরকারী আমলারা?
জানিনা বিড়ালের ভাগ্যে কখন শিকা ছেঁড়ে তবে মালয়শিয়ায় জব ভিসায় যেতে হলে অবশ্যই আপনার কাজের দক্ষতা থাকতে হবে। বিশেষকরে সরকারীভাবে যাদের আনা হবে। ধারণা করা হচ্ছে তাদের কৃষি,ইমারত নির্মাণ এই ভিসায় প্রেরণ করা হবে। অতএব এই সংক্রান্ত অভিজ্ঞতা আপনার থাকতে হবে। আবেদন ফরম জমা দেয়ার পর একটি নির্দিষ্ট তারিখে আপনাকে ডাকা হবে ইন্টারভিউ দেয়ার জন্য। ইন্টারভিউতে পাশ করলেই আপনি মালয়েশিয়া আসতে পারবেন। স্বাভাবিকভাবে ঘুষখোরদের ভিড়ে আপনি বিশাল লাইনে দাঁড়িয়েও চান্স পাবেননা। দেখবেন যারা একটু স্বচ্ছল তারা তিন লাখের জায়গায় পঞ্চাশ হাজার বেশী দিয়ে আগের সিরিয়াল নিয়ে নিচ্ছে। তারপর ট্রাফিক পুলিশের মতো হঠাৎ হাত দেখিয়ে থামিয়ে দেবে গাড়ির গতি। বলবে এইবারে আপনার যাওয়া হচ্ছেনা। নতুন সিরিয়ালের কাজ শুরু হবে মাস ছয়েক পরে।
সরকারের মালয়শিয়া শ্রমিক প্রেরনের অপেক্ষা সর্বশেষ অপেক্ষা হতে পারে আপনার জন্য। তাই ওসবের অপেক্ষা না করে হয় মালয়শিয়ার স্টুডেন্ট ভিসায় যান, নয়তো টুরিস্ট ভিসা নিয়ে একেবারে ঢুকে পড়ুন মালয়শিয়াতে।বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষের ধারণা কৃষি ভিসায় মালয়েশিয়া এসে ধান চাষ করবে। এমন ধারণা হওয়াটাই স্বাভাবিক। কেননা আমাদের দেশের মানুষ কৃষি কাজ বলতে বুঝে ধান চাষ,শাক-সবজি উৎপাদন। কিছু দিন আগে একজন আমাকে বলল সে মালয়েশিয়া আসার জন্য আবেদন ফরম নিয়ে এসেছে। আমি তাকে বললাম মালয়েশিয়া এসে তুমি কী কাজ করবে? সে আমাকে বলল `ক্যান ভাই ধান চাষ করমু`। মালয়েশিয়া পাহাড়ি দেশ, এখানে ধান চাষ করতে দেখেছি খুবই কম জায়গায়। এখানে চাল আসে অন্য দেশ থেকে যেমন চীন,ভারত ও থাইল্যান্ড থেকে। শাক-সবজির চাষ হয়।
আগে যারা কৃষি ভিসায় মালয়শিয়া গেছেন তাদেরকে মূলত পাঠানো হয়েছিল পাম বাগানে কাজ করার জন্য। পাম থেকে খাবার সয়াবিন তৈল তৈরী করা হয়। মালয়েশিয়াতে অসংখ্য পাম বাগান। এই সব পাম বাগানের আশেপাশে কোনো বাড়ি ঘর নেই। তো কৃষিকাজে যাদের আনা হবে তাদের বেশির ভাগ শ্রমিককে পাম বাগানেই কাজ করতে হবে বলেই জানি। ভাগ্যের উপর নির্ভর করে কে কোন জায়গায় কাজ করবে। কাজ হতে পারে শাক-সবজির বাগানে,হতে পারে চা-বাগানে নয়তো পাম বাগানে। কিন্তু আপনি যদি স্টুডেন্ট ভিসায় যান বা টুরিস্ট ভিসায় যান তবে আপনি যেকোন রেস্টুরেন্ট, হোটেল, বার এ কাজ করতে পারবেন। সময় থাকতে ইংরেজী শিখুন। ইংরেজী না জানা থাকলে আপনি মালয়শিয়ার জন্য একটা বস্তু ছাড়া কিছুই নন।
Onekta sotto kota,,
ReplyDelete