বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী দেশ রাশিয়ায় ব্যবসা, চিকিৎসাসহ নানা পেশায় বিচরণ বাড়ছে বাংলাদেশিদের। সেখানে দেড় হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি এখন স্থায়ীভাবে বাস করছেন। এদের বেশীরভাগই গিয়েছেন স্টুডেন্ট ভিসায়। পড়াশোনা শেষ হবার পর তারা এখন সেখানে আছেন এবং কাজ করছেন।
এর একটি বড় অংশই জড়িত ব্যবসা-বাণিজ্যে। সরকারি প্রতিষ্ঠানেও কাজ করছেন অনেকে। কয়েকজন প্রবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বর্তমানে কমপক্ষে ৬০০ বাংলাদেশি খাদ্যদ্রব্য, ইলেকট্রনিক্স, গার্মেন্ট পণ্যসহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত। অনেক ব্যবসায়ীর রাশিয়ার বাজারে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ আর্থিক লেনদেন আছে। বেশ কয়েকজন চিকিৎসক সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন। সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানেও প্রবাসীরা কর্মরত। ব্যবসায়ীদের কেউ কেউ আবার চাহিদা থাকায় বাংলাদেশ থেকে কাঁচা পাট নিয়ে রাশিয়াতেই প্রক্রিয়াজাত করে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করছেন। জানা যায়, দেশটির রাজধানী মস্কোতেই অন্তত পাঁচজন বাংলাদেশি চিকিৎসক কাজ করছেন। তাদের মধ্যে চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা. শেখ হাবিবের বেশ সুনাম। নিজস্ব ক্লিনিকে তিনি রোগী দেখেন। শুধু রাশিয়ার প্রবাসী বাংলাদেশিদেরই নয়, স্থানীয়দেরও আস্থা অর্জন করেছেন এই চিকিৎসক। প্রবাসী বাংলাদেশিরা বলেন, রাশিয়ায় দীর্ঘদিন ধরে বাঙালিরা ইলেকট্রনিক্স পণ্যের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। আশির দশকে যারা সে দেশে শিক্ষার্থী হিসেবে গিয়েছিলেন তারা অনেকেই ছুটিতে বাড়ি গিয়ে বিভিন্ন পণ্য কিনে রাশিয়ায় আসতেন। পরে তা দ্বিগুণ দামে বিক্রি করতেন। লাভজনক হওয়ায় বর্তমানে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রবাসী ইলেকট্রনিক্স সামগ্রীর ব্যবসা করেন। কেউ কেউ মস্কোতে মোবাইল ফোনের দোকান দিয়েছেন। অনেকে বিভিন্ন দেশ থেকে পণ্য আমদানি করে রাশিয়ার খুচরা ও পাইকারি বাজারে বিক্রি করছেন। মসকোভা নামের সুপার মার্কেটে ইলেকট্রনিক্স পণ্য ব্যবসা করছেন বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি। প্রবাসী ব্যবসায়ীরা মস্কোতে বিজনেস সেন্টার কিনে ভাড়াও দিচ্ছেন। কারও আছে বিশাল চিনির বাজার। অনেকেই কাপড় ধোয়ার আধুনিক দোকান দিয়েছেন।
ব্যবসায়ীরা জানান, শীতকালে মৌসুমি ব্যবসা হিসেবে বাচ্চাদের ওভার জ্যাকেট বানিয়ে বিক্রি করছেন অনেক বাংলাদেশি। এ সময়ে অন্তত ১০০ জন ওভার জ্যাকেটের ব্যবসা করেন। তারা আরও জানান, রাশিয়ার বাজারে বাংলাদেশের হিমায়িত খাদ্য, চিংড়ি, চামড়া, পাটজাত পণ্য ও তৈরি পোশাকের প্রচুর চাহিদা। তাই রাশিয়ায় প্রবাসীদের ব্যবসা প্রসারের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। ইতিমধ্যে দু-তিনজন বড় ব্যবসায়ী খাদ্যদ্রব্যের ব্যবসায় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তারা মধ্যপ্রাচ্যর বিভিন্ন দেশ থেকে পণ্য আমদানি করছেন। ইরান, আজারবাইজান ও তুরস্ক থেকে কনটেইনারে আনছেন ফল ও শাক-সবজি। রাশিয়ার বাজারে সেসব পণ্য বিক্রি হচ্ছে দেদার। মস্কোর এমন একজন ব্যবসায়ী মোতালিব পাটোয়ারি। রাশিয়ায় চিকিৎসা শাস্ত্রের ওপর ডিগ্রি নিয়েছেন। কিন্তু এখন তিনি পুরোদস্তুর ব্যবসায়ী। মোতালিব পাটোয়ারি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘রাশিয়ায় ছাত্রাবস্থায় দেশে ছুটি কাটাতে গেলে ফেরার পথে একসঙ্গে তিনটা জিন্স প্যান্ট আনতাম। অনেক সময় একটির ওপর আরেকটি পরেও রাশিয়ায় ঢুকেছি। পরে ১০ ডলারে কেনা একটি প্যান্ট ৩০ ডলারে বিক্রি করতাম। ’ এ ব্যবসায়ী আরও জানান, বর্তমানে মস্কোতে তার খাদ্যপণ্যের ব্যবসার বেশ প্রসার হয়েছে। তিনি এখন বাংলাদেশ থেকে চা নিয়ে মস্কোর বাজার ধরার চেষ্টা করছেন।
Enter your comment...রাশিয়া স্টুডেন্ট ভিসায় যেতে খরচ কত?
ReplyDeleteকোন দেশে যাবার চিন্তা করলে প্রথমে আমাদের আপনার পড়াশোনার রেজাল্ট সম্পর্কে জানাবেন। কোন দেশে যাবার চিন্তা করলে যে সেই দেশের ভিসা হয়ে যাবে সেই চিন্তা ভুল।কত খরচ হবে পরের কথা, আগে আপনার কোয়ালিফিকেশন।
Deleteঅনেক ধন্যবাদ সঠিক তথ্য প্রদান করার জন্য। আমি ২০১৮ তে এইচ.এস.সি দেব। তারপর অনার্স ১ বছর পড়ে স্টুডেন্ট ভিসায় যাওয়ার চেষ্টা করব। কিন্তু স্টুডেন্ট ভিসায় বিদেশ যাওয়ার ব্যাপারে অধিক আগ্রহ থাকাই আমি তথ্য গুলো জানতে চাই।
ReplyDeleteআমরা আছি সঠিক তথ্য প্রদান করার জন্যই। আপনি যখন যাবেন তখন বাংলাদেশের অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে খরচের কথা বলতে হবে। আজ নয়।
Delete