আমাদের ব্লগে এস্তোনিয়ার ভিসা সম্পর্কে পড়ে প্রচুর পাঠক আমাদের ফোন দিচ্ছেন প্রতিদিন এবং প্রচুর ছাত্রছাত্রী আমাদের অফিসে এসেছেন এই দেশ সম্পর্কে খোঁজ খবর নিতে। এরই মধ্যে অনেক পাসপোর্ট জমা পড়েছে যারা জানুয়ারী ইনটেকে এস্তোনিয়ায় ব্যাচেলর বা শর্ট কোর্স করতে যাবেন। আমাদের মনে হয়েছে যে, আমাদের ব্লগে এই দেশ সম্পর্কে পরিপূর্ন তথ্য আমরা দিতে পারিনি। যে কারনে অনেকের মনে বহু প্রশ্ন জমা হয়ে আছে। তাই এই ব্লগে আমরা এস্তোনিয়া সম্পর্কে আরেকটু খোলামেলা লেখার চেষ্টা করলাম।
এস্তোনিয়া দেশটি বাল্টিক সাগরের পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত। এস্তোনিয়া বাল্টিক দেশগুলির মধ্যে ক্ষুদ্রতম এবং সবচেয়ে উত্তরে অবস্থিত। লাটভিয়া ও লিথুয়ানিয়া অপর দুইটি বাল্টিক রাষ্ট্র। সোভিয়েত আমলে এটি রাশিয়ার অংশ ছিল।এস্তোনিয়ার রাজধানী তাল্লিন একটি গুরুত্বপূর্ণ বাল্টিক সমুদ্রবন্দর এবং দেশের বৃহত্তম শহর। পুরো দেশের জনসংখ্যা মাত্র ১৩ লাখ। আপনি যদি এর মানচিত্র ভালোভাবে দেখেন তবে দেখবেন এটি বাল্টিক সাগরের দক্ষিন দিকে অবস্থিত। এর দক্ষিনে লাটভিয়া, ও লাটভিয়ার দক্ষিনে লিথুয়ানিয়া। এই তিনটি দেশই সেনজেন দেশ। ইউরোপে দুই ধরনের দেশ আছে। একটি EU ভুক্ত ও অন্যটি সেনজেনভুক্ত। EU ভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে ইউরো চুক্তি বা ভ্রমন চুক্তি নেই। যে কারনে আপনি যদি রোমানিয়া, বুলগেরিয়া, সাইপ্রাস, বেলারুশ এসব ইউরোপিয়ান দেশে যান তবে এসব দেশ থেকে পরে সেনজেন দেশসমূহে ঢুকতে পারবেননা। কারন এরা শুধুমাত্র EU ভুক্ত কিন্তু সেনজেনভুক্ত নয়। কিন্তু এস্তোনিয়াতে গেলে আপনি সকল ইউরোপিও সেনজেন দেশসমূহে ঢুকতে পারবেন। উইকিপিডিয়ায় সার্চ দিলে আপনি সেনজেন দেশের ব্যপারে নিচের তথ্যসমূহ পাবেনঃ
তাই এস্তোনিয়াতে ঢুকলে আপনি যে কোন দুই দিক দিয়ে অন্যান্য সেনজেন দেশে চলে যেতে পারবেন। একটি হলো রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গ হয়ে ফিনল্যন্ডে, সুইডেন বা নরওয়েতে। অথবা লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া হয়ে পোল্যান্ডে, জার্মানী বা অন্য দেশসমূহে। একটি উত্তর দিক ধরে এবং অন্যটি দক্ষিন দিক ধরে। দক্ষিন দিক ধরে তালিন থেকে শুরু করলে আপনি ই-৬৭ হাইওয়ে ধরে একেবারে লাটভিয়ার আদাজি পর্যন্ত যেতে পারবেন। সেখান থেকে লাটভিয়ার রাজধানী রিগা। রিগা থেকে খুব সহজে বাস ধরে আপনি একেবারে বর্ডার পার হয়ে লিথুয়ানিয়ার কুনাস এ চলে যাবেন। কুনাস থেকে বাসে বা ট্যাক্সিতে চেপে পোল্যান্ডের অগাস্টো। তবে এস্তোনিয়ার তালিন থেকে যাত্রা করে পোল্যান্ডের অগাস্টো পর্যন্ত সময় লাগবে ১০ ঘন্টার কিছুটা বেশী সময়। এই পথ চমৎকার এক পথ। এই পথে যাত্রা করে আপনি পোল্যান্ড পর্যন্ত পৌছুলে সারাজীবন আপনার চোখে ভাসবে চারপাশের দৃশ্য। একেবারে ফাঁকা হাইওয়েগুলো। বর্ডারগুলোতে কোন সমস্যা নেই। মাঝেমাঝে হয়তো কিছু পুলিশ বর্ডারে বাস থামিয়ে বাসে উঠে আপনার চেহারা দেখবে। এতে ভয়ের কোন কারন নেই। কেননা আপনার এস্তোনিয়ার ভিসা লাগানো পাসপোর্ট থাকলেই হলো। তারা আপনার পাসপোর্টও দেখতে চাইবেনা।
এস্তোনিয়া-লাটভিয়া বর্ডার। কোন গার্ড বা পুলিশ চেকপোস্ট নেই।
আমি এস্তোনিয়া সফরে যাবার আগে আমার এক এস্তোনিয়ান বন্ধুকে এ বিষয়ে মেইল করে জানতে চাই এস্তোনিয়া থেকে লাটভিয়া যেতে কি কোন সমস্যায় পড়বো কিনা। সে আমাকে নিচের মেইলটি পাঠায়ঃ
এবং এস্তোনিয়া থেকে আমি পোল্যান্ড পর্যন্ত একবারও কাস্টমস অফিসারদের কাছ থেকে কোন ঝামেলা পাইনি। এস্তোনিয়া থেকে মিলানা নামে একজন এস্তোনিয়ান নারী আমাকে পোল্যন্ড পর্যন্ত সঙ্গ দিয়েছিলেন। এস্তোনিয়া, লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া, পোল্যান্ড, জার্মানী এসব ইউরোপিয়ান দেশে ইংরেজী কম চলে কিন্তু যারা ইংরেজী পারে তারা খুবই ভালো ইংরেজী পারে। তবে এস্তোনিয়া আইটি সেক্টরে প্রচন্ডরকম উন্নতি লাভ করাতে এখানকার মানুষজন খুব দ্রুত ইংরেজীতে এগিয়ে যাচ্ছে। আপনি যদি এস্তোনিয়া থেকে পোল্যান্ড বা জার্মানী একা একা যেতে চান তবে পথে একজন এস্তোনিয়ান নারীর সাথে বন্ধুত্ব পাতিয়ে নেবেন। যদি কোন সমস্যা হয় তবে সেই ভাষাগত ত্রুটিগুলো সারিয়ে নেবে। এস্তোনিয়ান নারীরা খুবই বন্ধুত্বপ্রবন এবং হেল্পফুল।
তবে আমি চাইনা যে আপনি যদি পড়াশোনা করার জন্য এস্তোনিয়ায় গিয়ে থাকেন তবে সেদেশ ত্যাগ করে অন্য কোন দেশে চলে যান। কারন সব সুজোগ পাবেন আপনি এস্তোনিয়াতে। আপনি যদি এস্তোনিয়ার কোন ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করতে যান তবে অনেক কম খরচে পড়াশোনা শেষ করতে পারবেন। এস্তোনিয়া পৃথিবীর সবচেয়ে আইটি সেকটরে উন্নত দেশ।এস্তোনিয়ার জনগনকে ডিজিটাল পপুলেশন বলা হয়। এই দেশের বেশীরভাগ মানুষ আইটি সেকটরে এতোই উন্নত যে পৃথিবীর বড়ো বড়ো কাজগুলো এস্তোনিয়ানরাই পেয়ে থাকে। আপনি খুব কম খরচে আইটির যেকোন কোর্স করতে পারবেন। যোগাযোগ মাধ্যম Skype এস্তোনিয়ার তৈরী। এস্তোনিয়ার রাস্তাঘাটে ড্রাইভারবিহীন বা রোবটচালিত গাড়ি চোখে পড়বে আপনার। শুধু কার্ড স্ক্র্যাচ করে উঠে পড়ুন আর মুখে বলুন কোথায় যেতে চান। রোবট গাড়ী আপনাকে নিয়ে যাবে সেখানে।
অনেকেই বলে এখানে বেশ ঠান্ডা পড়ে। মনে রাখবেন স্ক্যান্ডিনেভিয়ান যে কোন অঞ্চলে ঠান্ডা বেশী। এবং সেকারনে সেখানে শীতের প্রকোপ মুক্ত থাকার আয়োজনও বেশী। এস্তোনিয়ানরা দেয়ালের ভেতর গরম পানির প্রবাহের পদ্ধতি আবিস্কার করেছে ফলে শীতের দিনে ও রাতে পুরো বাড়ি গরম হয়ে থাকে। আপনি এস্তোনিয়ায় মাত্র ৪ বছর থাকলেই সেখানকার পিআর বা পার্মানেন্ট রেসিডেন্স পারমিট পাবেন। ইউরোপের আর কোন দেশে এতো কম সময়ে এই সুজোগ পাওয়া যায়না। এরই পাশ্ববর্তী দেশ লিথুয়ানিয়ায় দশ বছর থাকলেই তবে সেখানকার পিআর পাওয়া যায়। তাহলে এতো সুবিধা ফেলে আপনি কেন ইউরোপের অন্য দেশে চলে যেতে চান?
Estonia তে কি জব ভিসা পাওয়া যায় আর পাওায়া গেলে যেতে কি রকম খর? আর ইংলিশ এ যোগ্যতা ৪.৫ ilts
ReplyDeleteEstonia te ki work visa ase
ReplyDelete