আমাদের দেশের বেশীরভাগ ছাত্র-ছাত্রীরা আমেরিকা, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড কিংবা পশ্চিম ইউরোপ কিংবা স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশগুলোতে পড়তে যাবার জন্য উঠে পড়ে লাগে। তারা আগে টিউশন ফি পাঠায়, প্রয়োজন হলে ব্লক এ্যাকাউন্ট করে, IELTS করে বসে থাকে দিনের পর দিন।এর ফলে ইয়ার গ্যাপ হয়ে যায়। এদের বেশীরভাগের পড়াশোনা করা মূল উদ্দেশ্য নয়। ৯৮% ছাত্রছাত্রী চায় সেদেশে পড়াশোনার পাশাপাশি চাকরি করতে বা সেদেশে পার্মানেন্ট রেসিডেন্ট হতে। বাংলাদেশে যতো ছাত্র ছাত্রী ইউরোপে পড়তে যেতে চায় তাদের বেশীরভাগ যেতে চায় জার্মানী, ফ্রান্স, ইটালী এসব দেশে। অথচ এসব দেশে ঢোকার সম্ভাবন সবসময় ক্ষীন। অথচ ইউরোপে ঢোকার জন্য এস্তোনিয়ার মতো একটা চমৎকার গেটওয়ে রয়েছে যা ছাত্রছাত্রীদের জানা নেই হয়তো।
চমৎকার এই দেশটির জনসংখ্যা মাত্র ১৩ লাখ। দেশটির প্রতিবেশী দেশ হচ্ছে ফিনল্যান্ড, সুইডেন ও লাটভিয়া। ইইউ ও সেনজেনভুক্ত এই দেশটি মানবাধিকার সূচকে সব চাইতে ওপরের সারির দেশগুলোর একটি।দেশটি পরিচিত ডিজিটাল দেশ হিসেবে। এস্তোনিয়াই পৃথিবীর সর্বপ্রথম রাষ্ট্র যারা তাদের সংসদ নির্বাচনে ভোট দিয়েছে অনলাইনে। দেশটিতে সকল রকম গুরুত্বপূর্ণ ফাইল সাইন করা হয় ডিজিটালি। পুরো দেশটিই পৃথিবীতে পরিচিত “ই-কান্ট্রি” হিসেবে। স্কাইপির (Skype) মতো কোম্পানিও এস্তোনিয়া আর সুইডেনের যৌথ প্রযোজনায় পরিচালিত। পৃথিবীর সব চাইতে বিশুদ্ধ বাতাসের দেশে হিসেবেও রাষ্ট্রটি স্বীকৃত। রয়েছে মত প্রকাশের সব রকম স্বাধীনতা। অথচ আমরা কয়জনই বা এই দেশটি সম্পর্কে জানি।দেশটিতে বিদেশী ছাত্র-ছাত্রীদের ইংরেজিতে ব্যাচেলর, মাস্টার্স ও পিএচডি করার সুযোগ রয়েছে। ইংল্যান্ড, আমেরিকা কিংবা অন্যান্য পশ্চিম ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটিগুলোর মতো এতো বেশি টিউশন ফি দিয়ে এখানে পড়তে হয় না। কিছু কিছু ইউনিভার্সিটির কিছু সাবজেক্টে এমনকি ফ্রি’তে পড়ারও ব্যবস্থা রয়েছে। আর যেসব ইউনিভার্সিটিতে টিউশন ফি দিয়ে পড়তে হয়, সেখনে টিউশন ফি বাংলাদেশের বেশীরভাগ প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির টিউশন ফির চাইতেও কম।
এছাড়া থাকা-খাওয়ার জন্যও এই দেশটি চমৎকার। কম খরচে খুব ভালো ভাবে থাকা-খাওয়ার সুযোগও রয়েছে দেশটিতে। সব চাইতে বড় সুবিধা হচ্ছে চার বছর থাকার পর দেশটিতে স্থায়ী হওয়ার জন্য আবেদন করা যায়। আর একটানা ছয় বছর থাকলে নাগরিকও হওয়া যায়।এস্তোনিয়া হতে পারে বাংলাদেশী ছাত্র- ছাত্রীদের ভবিষ্যৎ পড়াশুনার একটি জায়গা। এস্তোনিয়ার সব ধরনের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য স্কাইপি দেয়াটা অনেকটা বাধ্যতামূলক। স্কাইপিতে টিকে গেলে আপনার ভিসা হতে সময় লাগেনা। তবে এইচএসসি পর্যায়ের কোন সাবজেক্টে ২ এর নিচে জিপিএ থাকলে আবেদন করা যাবে না।এখানে ভর্তি হওয়ার প্রক্রিয়া’টা মোটামুটি সহজ।
একেক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি প্রক্রিয়া একেক রকম। তবে কম বেশি প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয়ে কাছাকাছি নিয়মেই আন্তর্জাতিক ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি করানো হয়ে থাকে। এস্তোনিয়ার ভিসা পাওয়াও তুলনামূলক ভাবে সহজ। তবে একটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে এস্তোনিয়ার কোন এম্বাসি বাংলাদেশে নেই। তাই ছাত্র-ছাত্রীদের রেসিডেন্স পারমিট কিংবা ভিসার জন্য ভারতের নয়াদিল্লিতে গিয়ে নিজের ভিসা নিজেকেই আনতে হয়। সেক্ষেত্রে প্রথমে এখান থেকে স্কাইপিতে টিকে গেলে আবেদন করা হয়। এরপর এজেন্ট নিজেই খরচ করে স্টুডেন্টের নামে এ্যাকাউন্ট খোলেন। ভিসার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রসেসিং করেন। তারপর স্টুডেন্ট নিজে গিয়ে নয়াদিল্লী থেকে পাসপোর্ট তুলে আনে।
0 Reviews:
Post a Comment