বিভিন্ন দেশের ভিসার কাজ যারা করে তারা দুই ভাবে প্রসেসিং করে থাকে। এক সেল্ফ পেইড ও ফুল কনট্রাকট। সব দেশের ক্ষেত্রেই এই বিষয়টা দেখা যায়। আপনি যখন কোন দেশের ভিসার কাজের জন্য কারো কাছে যাবেন তখন তারা দুইভাবে কাজ করার প্রক্রিয়া আপনাকে দেখাবে। গুলশানে যেসব বড়ো বড়ো ফার্ম আছে তারা অবশ্য ফুল কন্ট্রাকটে কাজ করতে নারাজ। তারা মূলত কাজ করে সেল্ফ পেইড বা সেমি পেইড সিস্টেমে। সেল্ফ পেইড বিষয়টা হলো ভিসা করতে যা খরচ হবে তা আপনি বহন করবেন। সেমি পেইড হলো আপনি কেবল তাদের নির্দিষ্ট ফাইল ওপেনিং ফি দেবেন এবং ভিসা ফি দেবেন। আর তারা বাকি সব পরিশোধ করবে যেখানে যা লাগে ভিত্তিতে। আর ফুল কন্ট্রাকট হলো আপনি কোন টাকা দেবেননা। তারাই সব খরচ করবে। আপনি কেবল ভিসার পরে একটা এ্যামাউন্ট দেবেন। এখন কথা হলো কোনটা ভালো আপনার জন্য? সব ধরনের ভিসা পেপার প্রসেসিং এ নানা ধরনের ঝুট ঝামেলা থাকেই। আমি নিজেও ভিসা প্রসেসিং করি। আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি যে, যে ভিসার মধ্যে কোন ঝামেলা থাকার কথা নয় সেখানেও ঝামেলা হয়ে যায়। যেমন ধরুন সব সময় আমেরিকার আই টোয়েন্টি পেপার আসে এক মাসে, কিন্তু হঠাৎ করে কোন ফাইলের বেলায় ইউনিভার্সিটি আই টোয়েন্টি দিতে লেট করে ফেললো বা কোন এ্যাডিশনাল পেপার চেয়ে বসলো। ক্লায়েন্ট ব্যপারটা বুঝতে চায়না। ভিসা দেয়া না দেয়া সম্পুর্ন নির্ভর করে ভিসা প্রদানকারী অথরিটি বা এ্যামবাসী বা কনসুলেটের ওপর। পেপার প্রসেসিং এর সময় ফুল কন্ট্রাকট শুনে ক্লায়েন্ট মনে করে যে, কন্ট্রাকট বোধহয় এ্যামবাসির সাথে। আসলে তা নয়। দেখবেন যে একজন রাজমিস্ত্রিও কন্ট্রাকটে কাজ করে। অর্থাৎ সে কাজ করবে প্যাকেজে। ডেইলি বেসিসে নয়। আর আমাদের বেলায়, আমরা যদি বলি ফুল কন্ট্রাক্ট তবে বুঝতে হবে যে, আমরা কাজ করবো এমন এক প্যাকেজে যেখানে আমরাই সব খরচ দেবো আর ভিসা হয়ে যাবার পর আপনি আমাদের পেমেন্ট দেবেন। ভিসার পর আমরা কোন সার্ভিস চার্জ নেবোনা বরং তারচেয়ে বেশী টাকাই নেবো। প্রশ্ন করতে পারেন কোন ধরনের ভিসা প্রসেসিং এ কার লাভ বেশী? আমি বলবো একেক জনের জন্য একেক ধরনের ভিসা পেপার প্রসেস পছন্দনীয় ও লাভজনক। যেমন স্টুডেন্ট ভিসার ক্ষেত্রে মা বাবা চায় ছেলের বিদেশের ভিসা হয়ে যাবার পর তারা সব টাকা দেবেন। ফলে তারা ক্ষতিগ্রস্হ বেশী হন। এটা তারা বোঝেননা। যেমন তারা যদি আগে সেমি কন্ট্রাকট এ চুক্তিবদ্ধ হতো তবে তাদের কম খরচ হতো। আবার প্রথমে ভিসা না হলে কিছু খরচ হবার ঝুঁকি থাকতো। যদিও ফুল কন্ট্রাক্টে এই ঝুঁকি নেই তারপরও তাদেরকে ভিসার পর কমকরেও তিন থেকে চার লাখ টাকা বেশীি প্রদান করতে হচ্ছে। কেননা আমি যদি আপনার জন্য পঝ্চাশ হাজার টাকা ভিসার আগে ঝুঁকি নিয়ে খরচ করি তবে আমি অবশ্যই ভিসার পর বেশী টাকা লাভ করবো। কারন এই পঞ্চাশ হাজার টাকার ওপর আমি ঝুঁকি নিয়েছি। তাই আমি মনে করি যারা ভিসা পেতে চায় তারা হয় সেমি কন্ট্রাকট বা সেল্ফ পেইড যে কোন একটিতে যেতে পারেন। তাতে ভিসার পর খরচ অনেক কম পড়বে কেননা এতে আপনি নিজে রিস্ক নিচ্ছেন। তাই এজেন্টের যেহেতু রিস্ক নেই সে কম প্রফিটেই সন্তুষ্ঠ।
আমাদের দেশেই কেবল ফুল কন্ট্রাক্ট নামে এই সিস্টেমটি চালু আছে। কিন্তু আপনি যদি বাইরের কোন দেশে যান সেখানকার এজেন্টরা কখনই ফুল কন্ট্রাক্টে যাবেনা। তারা আপনার কাছ থেকে টাকা নেবে তাদের সার্ভিস চার্জ হিসাবে এবং তখনই তারা আপনার জন্য ভিসা প্রসেসিং করবে। আপনি যদি বড়ো বড়ো এজেন্টদের দিকে তাকান তবে দেখবেন তারা কখনও আপনার টাকা মেরে দেবেননা। বরং ইচ্ছে করলে আপনিই তাদের টাকা মেরে দিতে পারেন। তারা আপনার জন্য ফুল কন্ট্রাকটে কাজ করবে আর আপনি যদি ভিসা পাবার পর মত বদলে ফেলেন। এবং তখন যদি আপনি নিজের মোবাইল ফোনটা বন্ধ করে দেন তবে তারাই ক্ষতিগ্রস্থ হবে। এভাবে বহু এজেন্ট ক্ষতিগ্রস্থ হবার পর তারা আপনার কাছে অগ্রিম টাকা দাবী করে থাকে। মনে রাখবেন এজেন্ট টাকা মারবেনা বরং আপনি যার মাধ্যমে তাদের কাছে এসেছেন তারাই আপনার টাকা মারবে। সেই সব দালাল যারা আপনার কাছের মানুষ তাদের থেকে সাবধান। এজেন্ট থেকে নয়।
0 comments:
Post a Comment